মো: সানাউল্লাহ রিয়াদ, বরগুনা – বরগুনায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের অনুষ্ঠানে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এসময় একজনকে দেশীয় অস্রসহ আটক করা হয়েছে।
শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বরগুনা শিল্পকলা একাডেমিতে এ ঘটনা ঘটে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা জানান, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বরিশাল জোনের বিভাগীয় ছাত্র জনতা মৈত্রী সফরের অংশ হিসেবে শনিবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে বরগুনা জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় করেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
ওই সভার এক পর্যায়ে নেতৃত্ব ও আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টার পূর্ব বিরোধের জেরে বরগুনার সমন্বয়ক দাবি করা মীর নিলয় ও আরেক সমন্বয়ক দাবি করা রেজাউল করিম গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতি থেকে চেয়ার ছোড়াছুড়ি ও মারামারি শুরু হলে পুলিশ সদস্যরা প্রায় আধাঘন্টার চেষ্টায় পরিস্থিতি শান্ত করেন এবং প্রথম দফার সভা সংক্ষিপ্ত হয়।
তবে এসময় শিল্পকলার বাইরে একদল বিক্ষিপ্ত শিক্ষার্থী মীর নিলয়কে ছাত্রলীগের দোসর আখ্যায়িত করে স্লোগান দিতে থাকে এবং এসময় তারা সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম মিঞাকে নিলয় গ্রুপের মাধ্যমে সুবিধা অর্জনের পায়তারার অভিযোগ তুলে তার বিরুদ্ধেও স্লোগান দেয়।
পরে বিকালে দ্বিতীয় দফার সভা শুরু হলে সভাস্থলে বরগুনা থানাপাড়ার অনিক নামে একজন ধারালো অস্র নিয়ে শিল্পকলায় প্রবেশ করে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর চেষ্টাকালে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তাকে আটক করে।
মতবিনিময় সভার মঞ্চে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় আট সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ, সানজানা আফিফা অদিতি, এম এ সাঈদ, হাসিবুল ইসলাম শান্ত শহিদুল ইসলাম শাহেদ, তৌহিদ আহমেদ আশিক, জিহাদ হোসাইন, সাব্বির উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে আব্দুল হান্নান মাসুদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা আন্দোলনের সময় কোনো দল দেখিনি। এখন কেন দল নিয়ে কথা বলা হচ্ছে। আন্দোলনের শুরুতে যারা ছিলো তারা আমাদের সাথে থাকবেন। কোনো দখলবাজ, চাদাবাজকে আমরা জায়গা দেবনা। আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। মনে রাখতে হবে ৫ আগষ্ট থেকে ক্ষমতা দেখানো রাজনীতি বন্ধ হয়েছে, দখলবাজির রাজনীতির অবসান হয়েছে।
বরগুনায় দুই পক্ষের মধ্যে নিজেকে সমন্বয়ক দাবি করা একটি পক্ষের নেতা রেজাউল করিম ও তার সমর্থকরা জানান, ছাত্রলীগের নামধারী নেতা মীর নিলয় আন্দোলনের সময় তিনি কোনো ভূমিকা রাখেনি। দেশ যখন স্বাধীন হল, ঠিক তখন এসে তিনি বরগুনার সমন্বয়ক দাবি করছেন। মীর নিলয়সহ তার লোকজন সভা চলাকালে তাদের উপর হামলা করে।
বরগুনার আরেক পক্ষের সমন্বয়ক দাবি করা মীর নিলয় বলেন, কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের সাথে মতবিনিময় সভায় যে ঘটনা ঘটেছিল, তা অবসান হয়েছে। সমন্বয়ক রেজাউল লোকজন নিয়ে আমার গায়ে হাত তুলেছিল। এখন সমস্যা নেই।
বরগুনা সদর সর্কেলের পুলিশ সুপার মোঃ আবদুল হালিম বলেন, শিল্পকলায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের মতবিনিময় সভায় দুই পক্ষের হাতাহাতি ঘটনা ঘটলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি শান্ত করেন এবং ধারালো অস্ত্রসহ প্রবেশ করা অনিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে তাকে আটক করা হয়েছে।